সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা গণত্রাণ সংগ্রহের আহ্বান জানালে ব্যাপক সাড়া পড়ে। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে ত্রাণ সামগ্রীসহ নগদ অর্থ জমা দেন ।
জানুয়ারি ২০২৪ থেকে শুরু হওয়া এই ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি গত ২২ আগস্ট শুরু হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ১১ কোটি ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা বন্যার্তদের সাহায্যে খরচ করা হয়েছে, বাকি প্রায় নয় কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যাংকে সংরক্ষিত রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তহবিলের ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিয়ে আলোচনা হলেও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ জানিয়েছিলেন যে, এ ব্যাপারে কোনও দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
তিনি জানান, ত্রাণ তহবিলের অর্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের শাখায় বিশেষভাবে সংরক্ষিত আছে। এসব তহবিলের উপর নজরদারি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকসহ তিনজনের সম্মিলিত সিগনেচার প্রয়োজন, যার ফলে আত্মসাতের কোনও সম্ভাবনা নেই।
তাছাড়া, তহবিলের আয় ও ব্যয়ের হিসাবের অডিট চলমান আছে এবং শিগগিরই অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। ত্রাণ কার্যক্রমের ব্যয় এবং অন্যান্য খরচের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য একটি সিএ ফার্মের প্রফেশনাল ব্যক্তিদের দ্বারা এই অডিট করা হচ্ছে।
এই তহবিলের বেশিরভাগ অর্থ এখন ব্যাংকে রাখা হয়েছে এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে খরচ করার পরিকল্পনা রয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, প্রাথমিক ত্রাণ কার্যক্রমের পর অর্থের অবশিষ্ট অংশ সরকারের পুনর্বাসন তহবিলে প্রদান করা হবে যাতে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ নিশ্চিত হয়।
উল্লেখযোগ্য হলো, বিভিন্ন সভা-সমাবেশের জন্য কোনো ত্রাণ তহবিল ব্যবহার করা হয়নি। হাসনাত বলেন, ‘যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে যে ত্রাণ তহবিলের কোনো টাকা অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, আমরা তার শাস্তি মাথা পেতে নেব।’
এছাড়া, টিএসসিতে ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণে সহায়তা প্রদানকারী ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে, যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রমের সঠিক ব্যবহারের প্রতি অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে।