ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪: ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে দীর্ঘ দেড় দশকের শাসনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তার পদত্যাগের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। তবে সম্প্রতি একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি চিঠি, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি এক ব্যক্তির সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনে তিনি দাবি করেছেন, তিনি পদত্যাগ করেননি এবং যেকোনো মুহূর্তে দেশে ফিরে আসবেন। শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ও একাধিকবার দাবি করেছেন যে, তার মা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। এই দাবির মধ্যে, ভারতীয় গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একই মতামত প্রকাশ করেছেন।
এমতাবস্থায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলার মধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
চিঠিতে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন, "আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাই যে, সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে যেখানে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আরও কোনো প্রাণহানি এড়ানোর জন্য আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি।"
তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন, "আমি এই ঘটনাগুলোতে সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্বীকার করছি এবং এ দেশের জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণের প্রতি আমার অঙ্গীকার সবসময় অটুট থাকবে।" পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন,"গত পনেরো বছর ধরে আমি আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, যা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী প্রমাণ করছে যে, এ মুহূর্তে দেশকে এগিয়ে নিতে অন্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। আমি আশা করি, আমার পদত্যাগ বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন পথ খুলে দেবে এবং শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।"
চিঠির শেষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লেখেন, "এই কঠিন সময়ে আমার সরকার যা কিছু করেছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত। আমি সব বাধ্যবাধকতা মেনে নিচ্ছি এবং এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বৃহত্তর স্বার্থে নিয়েছি।"
চিঠিটি bdmirrior.news হাতে পৌঁছেছে। তবে bdmirror.news পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তীব্র অবস্থার মধ্যে গত ৫ আগস্ট দুপুরে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে চড়ে বোন রেহানাকে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।