সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন চাকরি পেয়েছেন, এর একটি সম্পূর্ণ তালিকা তৈরি করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি আরও জানান, যারা মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এসব তথ্য দেন। তিনি বলেন, "মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজনের চাকরি হয়েছে, সেটার একটি তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। তালিকা সম্পন্ন হলে আমরা সকলের সামনে এই বিষয়টি উপস্থাপন করব।" তিনি আরও যোগ করেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ করা কোটার সুযোগ নিয়ে কেউ যেন অযথা সুবিধা না নিতে পারে, সে বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, "যারা চাকরি পেয়েছে, তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি সম্পূর্ণ ন্যায্য হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করা হবে। এই বিষয়ে নানা রকম মামলা রয়েছে, প্রায় ৩ হাজার ৭০০ মামলা ঝুলে রয়েছে। আমরা সেসব মামলার সুষ্ঠু সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) নির্ধারণ করবে, কারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। মন্ত্রণালয় তাদের দেওয়া নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করবে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে এবং এই বিষয়ে আইনগত তদন্তও চলছে। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নিয়েও আপত্তি উঠেছে, যা সময়মতো পরিষ্কার করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য রিভিউ বা পর্যালোচনা হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের প্রকৃত সম্মান ফিরে পাবেন, এমনটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, যা কোনোভাবেই অবহেলার শিকার হতে পারে না।"
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি বলেন, "এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ, এবং সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা এ বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ।"
মুক্তিযুদ্ধের মহিমা এবং বীরত্বের গৌরব অক্ষুন্ন রাখার প্রয়াসে সরকার এ বিষয়গুলোর দিকে কঠোর দৃষ্টি দিচ্ছে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।