দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অবশেষে পদত্যাগ করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের মাত্র ২৭ দিনের মাথায়, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী। বঙ্গভবনের একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হন, আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর। তার আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ। শিরীন শারমিন চৌধুরী স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সরকারের প্রতি নিজের নিরপেক্ষতা এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য নিজের নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একটি নাটকীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে পুনরায় সরকার গঠন করে এবং শিরীন শারমিন চৌধুরীকে আবার স্পিকার নির্বাচিত করা হয়। তবে, মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে যায়।
৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং দেশ ত্যাগ করেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে। এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়।
এই সময়ের মধ্যে সহিংসতায় ১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন, যা দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায় হয়ে থাকবে। সহিংসতায় গুলি করে মানুষ হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এমনকি, শিরীন শারমিন চৌধুরীর বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরীর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। এ পদত্যাগ শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটভূমির একটি প্রতিফলন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
এখন দেখার বিষয় হলো, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার কিভাবে এই সংকট মোকাবিলা করবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে কিনা। তবে এটা নিশ্চিত যে, শিরীন শারমিন চৌধুরীর পদত্যাগ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।